সম্পাদনা ও প্রকাশনা: ফাহাদ কবীর, তরুণ বার্তা ।
একটি প্রচলিত গল্প আছে, গল্পটি এরকম: এক গ্রামে এক কৃষক বাস করত। তার ছিল এক ছেলে। সে একটি ঘোড়া কিনে আনলো। ঘোড়াটি ভীষণ সুন্দর দেখতে ছিল এবং গ্রামবাসী ঘোড়াটির সৌন্দর্যের জন্য এটিকে চিনত। লোকে বলল, ” ঘোড়াটি তো দারুণ। নিশ্চয় এটি তোমাদের সৌভাগ্যের কারণ হবে।”
একদিন ঘোড়াটি কৃষকের বাড়ি ছেড়ে চলে গেল। প্রতিবেশীরা দলে দলে এসে বলল, “আহা, ঘোড়াটির জন্য তুমি অনেক অর্থ ব্যয় করেছিলে। শেষে কিনা পালিয়ে গেলো। ঘোড়াটি তোমার দুর্ভাগ্যের কারণ।”
কিছুদিন পর আশ্চর্য এক ঘটনা ঘটলো। তাদের ঘোড়াটি বাড়ি ফিরে এলো এবং সেটি আরো কয়েকটি বুনো ঘোড়া সাথে করে নিয়ে এলো। ফলে, কৃষক বিনা ব্যয়ে আরো কিছু ঘোড়া পেয়ে গেলো।গ্রামবাসী চমকে গেল এবং বলল,” তুমি তো দারুণ সৌভাগ্যবান। ঘোড়াটি তোমার সৌভাগ্যের প্রতীক।”

এই ঘটনার কিছুদিন যেতে না যেতেই ঘটলো যত বিপত্তি। ঘোড়াটির পিঠ থেকে তার ছেলে হঠাৎই পড়ে গেলো। ফলে তার পা ভেঙে গেলো। প্রতিবেশীরা এসে বলল,” ঘোড়াটি তোমার দুর্ভাগ্যের কারণ। আহারে একমাত্র ছেলেটিকে শেষে না পঙ্গু হতে হলো। ঘোড়াটিকে বিদেয় করো।”
অল্পদিনের মধ্যেই রাজ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ লাগলো। দেশের সেনা যুদ্ধে প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ায় গ্রামে গ্রামে যুবকদের জোরপূর্বক যুদ্ধে পাঠানো হলো। কিন্তু কৃষকের ছেলে ল্যাংড়া বলে তাকে যুদ্ধে নেওয়া হলোনা। গ্রামের বাকি সকল ছেলে যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা গেলো। গ্রামবাসীরা বলল,” ঘোড়াটি তোমার সৌভাগ্যের প্রতীক। ঘোড়াটির জন্যই তোমার ছেলে বেঁচে গেলো।”
আসলে মানুষ আমাদের জীবনের ঘটনাকে তৎক্ষণাৎ সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য বলে ঘোষণা করে দেয়। ওই ঘোড়াটি হলো আমাদের সিদ্ধান্ত। মানুষ চট করে আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে না যেতে পারলে বলে ” তোমার দুর্ভাগ্য।” আর, পৌঁছে গেলে বলে ” তোমার সৌভাগ্য।” কিন্তু, অন্যরা যা-ই বলুক না কেন, তাদের মতামতে আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়না। আমরা আমাদের লক্ষ্যে অটল থাকলে, কখনো ভালো, কখনো খারাপ ভাগ্যের ভেতর দিয়ে যেতে যেতে ঠিকই আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছে যাবো।
এই প্রবন্ধের লেখক: ফাহাদ কবীর।
তরুণ বার্তার অভিজ্ঞ কন্টেন্ট রাইটার।তার অন্যান্য রচনাসমূহ দেখতে এখানে ক্লিক করুন – ফাহাদ কবীর।“
4 Comments
খুবসুন্দর একটা শিক্ষামূলক আলোচনা।
ধন্যবাদ।
আপনার পরবর্তি গল্পের জন্য অপেক্ষা রইলো
অনেক সুন্দর ❤