বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের বহু প্রতীক্ষিত তারিখ ঘোষণা করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। রাজ্যে তিন দফায় ভোটগ্রহণ হবে বলে জানানো হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে। নভেম্বর মাসের মধ্যে এই ভোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ফলাফল প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের বিবৃতি অনুযায়ী, প্রথম দফা ভোট হবে নভেম্বরের শুরুতেই। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা ভোট যথাক্রমে নভেম্বর মধ্যভাগ ও শেষ দিকে সম্পন্ন হবে। প্রতিটি দফার মধ্যে পর্যাপ্ত ব্যবধান রাখা হয়েছে যাতে প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা যায়। কমিশন জানিয়েছে, ভোটগ্রহণের দিন রাজ্যের প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএম ও ভিভিপ্যাট যন্ত্র ব্যবহার করা হবে, যাতে ভোটপদ্ধতিতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
বিহারের নির্বাচনের আগে প্রশাসনের তরফে নিরাপত্তার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষত সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্থানীয় পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও প্রতিটি জেলায় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে যাতে ভোট প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।
ভোটের তারিখ ঘোষণা হতেই রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ব্যস্ততা বেড়েছে। জেডিইউ, আরজেডি, বিজেপি ও কংগ্রেস—সবকটি দলই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার দৌড়ে নেমে পড়েছে। নেতারা জনসভা, রোড শো ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে পৌঁছতে উদ্যোগী হচ্ছেন। বিশেষ করে যুব ভোটারদের লক্ষ্য করেই নতুন প্রচার-কৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে।
একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, এ বছরের নির্বাচন বিহারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ রাজ্যে উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও শিক্ষা—এই তিনটি মূল ইস্যুতে ভোটারদের মনোযোগ কেন্দ্রীভূত। ভোটের ফল নির্ধারণে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা এবারও বড় হতে চলেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ভোটের আগে সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের উৎসাহ এবং কৌতূহল তৈরি হয়েছে। বহু গ্রামীণ এলাকায় ভোটার তালিকা যাচাই ও সচেতনতা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশন বিশেষ অ্যাপ ও অনলাইন মনিটরিং সিস্টেম চালু করেছে, যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ অনিয়মের অভিযোগ জানাতে পারবেন।
নভেম্বরে শুরু হওয়া এই ভোটযুদ্ধ নিয়ে এখনই রাজনৈতিক তাপমাত্রা উর্ধ্বমুখী। কার হাতে উঠবে বিহারের ক্ষমতার দণ্ড—তা জানার জন্য এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা গোটা দেশ।
